নভেম্বর সংখ্যার
আমন্ত্রিত সম্পাদক : সৈয়দ কওসর জামাল
সম্পাদকীয় এখন পর্যন্ত কোনও মুদ্রিত সাহিত্য-পত্রিকার সম্পাদক হবার সুযোগ আমার হয়নি। একটা পত্রিকা চালানোর যে কত সমস্যা, তা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় না থাকলেও বন্ধুদের দেখে উপলব্ধি করতে পারি। তবে সম্পাদনার কাজ করতে হয়েছে পেশাগত কারণে। আকাশবাণীতে দীর্ঘদিন ধরে সাপ্তাহিক রেডিও ম্যাগাজিন প্রোগ্রাম চালাতে হয়েছে, তবে সে তো শুধু শব্দ দিয়ে তৈরি, সম্প্রচারের সময় না শুনলে আর শোনার সুযোগ থাকে না। চরিত্রগতভাবে এর ব্যাপারটাই আলাদা। আর ওয়েব-ম্যাগাজিন? এও কি অন্যরকম নয়?
অডিওর জগৎ থেকে এবার 'বারোয়ারি কবিয়াল'-এর হাত ধরে অন্তর্জাল পত্রিকার জগতে। তবে এর পরিকল্পনা আমার হলেও প্রধান সম্পাদকের টেকনিক্যাল সহায়তা না পেলে আমার পক্ষে এর প্রকাশ সম্ভব হত না। ভালো লাগছে, এই সংখ্যায় সদ্য-প্রয়াত সমরেন্দ্র সেনগুপ্তর অ-প্রকাশিত রচনা থেকে অতিতরুণ কবি অনির্বাণ পালের কবিতা একসঙ্গে দেখা যাবে। আমাদের সময়ের শক্তিশালী কবি প্রয়াত অনন্য রায়ের 'আলোর অপেরা' থেকে কয়েকটি কবিতার পুনর্মুদ্রণ নিশ্চয় সবার ভালো লাগবে।
সবাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। -সৈয়দ কওসর
জামাল
এই সংখ্যার ব্যানার-শিল্পী : দেবর্ষি সরকার অক্টোবর সংখ্যার আমন্ত্রিত সম্পাদক : আলতাফ হোসেন
সম্পাদকের জবানবন্দি সেলফোন হাতে পায়চারি করছি একদিন, হঠাৎ মিতুল দত্তের ফোন : আলতাফ ভাই, আপনাকে বারোয়ারি কবিয়াল-এর পরের সংখ্যাটির সম্পাদকের দায়িত্ব নিতে হবে...। আমি তো এটুকু শুনেই এলোমেলো হয়ে গেছি। এর পরের কথাগুলো ভাল করে শুনব-কি, ‘দায়িত্ব’ শব্দেই আমার উল্টোপাল্টা জগৎ ফিরে এসেছে আবার। কিন্তু মিতুলকে তো আর সে কথা বলা যায় না, শুনলাম যে বলছি, ‘না, মিতুল, না, সম্পাদনা কী জিনিস আমি জানি না, কোনওদিন করিনি, আমাকে বাদ দাও।’ মিতুল তখন অভয় দিয়ে বলল, ‘আপনার একটুও চিন্তা করতে হবে না। আমি তো আছিই।’ মিতুলের এ কথার পর আমি আর কীভাবে ‘না’ বলি? সুতরাং ‘সম্পাদক’ বনে গেলাম। দুদিনের। থুড়ি, এক মাসের। ভারিক্কি চালে মিতুলকে লিখলাম, তোমার যদি কিছু ভাবনা থাকে বলো। মিতুল জানাল, শূন্য দশকের কবিদের কবিতা নিয়ে এ সংখ্যাটি করা যায় না? মনে ধরল আমার। দেখলাম শুধু প্রায় দশ বছরের সম্পাদনার অভিজ্ঞতাই আছে যে তা নয়, মিতুলের জানাশোনা কবি-লেখকের সংখ্যাও অনেক, যেমন পশ্চিমবঙ্গের, তেমনি বাংলাদেশের। তাঁদের কে কেমন লেখেন সে বিষয়েও যথেষ্ট অবহিত সে। অন্যদিকে আমার অবস্থান একেবারে উল্টোদিকে। কারো সঙ্গেই যোগাযোগ নেই। যাওয়া-আসা নেই। ঢাকা শহর থেকে একটু দূরে থাকি, সেটা একটা কারণ বলা যেতে পারে। এ অবস্থায় মিতুলের পূর্ণ সহযোগিতা ছাড়া আমার পক্ষে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন (যতটুকুই করে থাকি) সম্ভব ছিল না। তরুণ কবিদের মধ্যেও কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছেন। তরুণ কবিদের উদ্দেশে বলি : আমার মন ভরল না। অন্তত ১০০ জন কবির কবিতা নিতে পারলে সন্তুষ্ট হতাম। দেখুন কাণ্ড! ‘সম্পাদক’ বনে যাওয়ায় কতই না লিখে চলেছি। থামি তবে এখানেই। শুভেচ্ছা সবাইকে। -আলতাফ হোসেন প্রথম সংখ্যার আমন্ত্রিত সম্পাদক : যশোধরা রায় চৌধুরী সম্পাদকের কেচ্ছাফাঁস মিতুল দত্তর মত নাছোড়বান্দার পাল্লায় পড়লে পর্বতও মহম্মদের কাছে যেতে পারে। কোনোদিন কোনোরকম রিয়েল ও ভার্চুয়াল পত্রিকা সম্পাদনা না করতে ব্রতপ্রাপ্ত আমিও শেষে ফেঁসে গেলাম। সব কবিদের প্রায় একটি, দেড়টি, বা মাইনাস একটি করে (মানে মৃত কোনো পত্রিকা, যা একদা বন্ধুদের সঙ্গে বার করতেন, যে বন্ধুরা এখন সময়গুণে শত্রু হয়ে গেছে...) পত্রিকাসম্পাদনার অভিজ্ঞতা থাকে। আমার নেই। কী আর করা যাবে। মিতুলের অপচেষ্টায় সেই অভাব পূরণ হল... ফলত মিতুল প্রায় সব কাজ করল, যেমন সে করে এসেছে ২০০২ থেকে কবিয়াল পত্রিকাটি সম্পাদনা করাকালীন। লিটলম্যাগ মেলায়, জানুয়ারির স্বচ্ছ ঠাণ্ডায়, আর পল্যুশন-আবিল বিকেলের কলকাত্তাইয়া হাওয়ায়, নন্দন চত্বরের গোল মাঠের যে স্টলকোনায় কবিয়াল বেরিয়েছিল, একটি ক্ষীণতনু ফিনফিনে অথচ মেজাজে ভারিক্কে পত্রিকা... সেই কোনাটা চোখ বুজলেই সাক্ষাৎ করতে পারি, আর মাথায় সবুজ কাপড়ের ফেটি বাঁধা, চোখে কাজলের সঙ্গে এক ডোজ পিশাচিনী-ম্যাজিক আর টিপে বিষের গুঁড়ো মাখানো মিতুলের মুখটা মনে পড়ে যায়। সেই মিতুল অসুখ বিসুখ, বন্ধুজনের পিঠে ছোরা মারা ভালবাসা, সব সামলে এখনো লিখে চলেছে, আর কবিয়াল বার করে চলেছে। তো, সে কবিয়ালের প্রথম ওয়েবম্যাগ, বারোয়ারি কবিয়াল, ঐ লিটলম্যাগ মেলার কোণটার মতই যা স্বতন্ত্র, হয়ে উঠেছে এক নব্য লেখার নবরত্ন কড়াই। প্রথম সংখ্যাতেই হাতে গরম, চেখে দেখুন কেমন ছ্যাঁকছোঁক ভেজেছে বেশ কয়েক কবিতা, কিছু গদ্য, আর অনেক কল্পনার চড়বড়ানি। আমাকে খুন্তি নাড়তে প্রায়শই হয়নি, উঁকি মেরে নুনঝাল পরখ করেই কাজ সেরেছি। পাঠক, চাখিয়া দেখুন। রান্না নুনকাটা হইলে দোষ আমার হইল। স্বাদু হইলে, তাহা মিতুলের কৃতি। অলমিতি। -যশোধরা রায়চৌধুরী বিঃ দ্রঃ : দয়া করে কেউ লেখা পাঠাবেন না। |
সুধী পাঠক, আজ 'কবিয়াল'-এর প্রথম আন্তর্জাল সংখ্যা 'বারোয়ারি কবিয়াল' প্রকাশিত হলো... এই কাজে আপনাদের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা কাম্য... আপনাদের সবাইকে শারদ শুভেচ্ছা... -মিতুল দত্ত
|